শিবিরকর্মী থেকে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীর এপিএস ফুয়াদ
ফরিদপুরে ছোটন হত্যা মামলায় সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এপিএস এইচ এম ফুয়াদ গ্রেপ্তার হওয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, দুই হাজার কোটি টাকা পাচারসহ অন্তত আট মামলার আসামি ফুয়াদের কথার বাইরে গিয়ে চলতে পারতো না কেউ। স্বাধীনতাবিরোধী, ফরিদপুরের রাজাকার মোজাহার চুকদারের ছেলে ফুয়াদের রাজনীতির হাতে খড়ি ছাত্র শিবিরের মধ্য দিয়ে। ১৯৮৬ সালে ছাত্রলীগে যোগ দিয়ে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের এজিএস নির্বাচিত হয়। ২০০১ সালে হন ফরিদপুর জেলা যুবলীগের সহ-সম্পাদক। ২০০৯ সালে হন সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পিআরও। সেই থেকে লাগামহীন তার দাপট। এ সময় কৌশলে মন্ত্রীর সাবেক এপিএস ও ছাত্রলীগের সভাপতি সত্যজিৎ মুখার্জিকে ২১টি ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মোকাররম মিয়া বাবুকে ১২টি মামলায় ফাসিয়ে দেন ফুয়াদ। ২০১৫ সালে হন মন্ত্রীর এপিএস। বাড়তে থাকে নেতাকর্মীদের ওপর জোর জুলুম ও নির্যাতন। ফুয়াদের নির্যাতনে নির্যাতিত আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, সে আমাকে এবং আমার পরিবারসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিতে থাকে। তার সাথে আরও যারা উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিল তারাও এজন্য দায়ী। তার একা এতোকিছু করার সামর্থ্য ছিল না। পদের সঙ্গে সঙ্গে যারা এজন্য দায়ী তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ২০১৬ সালে ছোটন হত্যার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে ফুয়াদের হেলমেট ও হাতুরী বাহিনীর। তাদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে আত্মগোপনে চলে যান জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। এর পর হামলার শিকার হয়েছেন তাদের স্বজনরা। ২০২০ সালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর সাড়াশি অভিযানে দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয় মন্ত্রীর আদর্শপুষ্ট খোকন রাজাকারের দুই ভাগনে রুবেল-বরকত। এর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে গাঢাকা দেয় ফুয়াদ। সবশেষ গত ১৩ই অক্টোবর রাতে ঢাকার বসুন্ধারা থেকে তাকে গ্রেপ্তার হয় ফুয়াদ। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আনন্দ মিছিল বের করে জেলা আওয়ামী লীগ।